আমার ৫ বছরের প্রবাসজীবনে যে সংবাদগুলো আমাকে সবচেয়ে বেশি আনন্দিত করেছিল সেসবের মধ্যে অন্যতম ছিল রংপুর বিভাগ ঘোষণা হবার সংবাদটি। একইসঙ্গে আমার প্রিয় রংপুর শহরটি সিটি কর্পোরেশন হবে এই ভাবনাটি আমাকে আলোড়িত করতো। এই পাঁচ বছরের সময়টাতে দেশে যাওয়ার সুযোগ হয়েছে মাত্র দু'বার। প্রথমবারতো দেশে গিয়েছিলাম ৪ বছর পরে। ঢাকার দূষণ আর বিষাক্ত পরিবেশ থেকে দুরে থাকার জন্য দেশে থাকা অবস্থার বেশিরভাগ সময়টা কাটিয়েছি আমার জন্মস্থান রংপুরে। প্রায় ১ মাস রংপুরে থেকে মনে হয়েছিল ৪ বছর আগে যে রংপুর দেখে বিলেত গিয়েছিলাম সেটার অনেক পরিবর্তন ঘটেছে। পরিবর্তন ঘটারই কথা, কারন আগে আমার প্রিয় শহরটি ছিল শুধুই একটা জেলা শহর। আর এখন সেটা বিভাগীয় শহরে রুপান্তরিত হয়েছে। এটা নিঃসন্দেহে সমগ্র রংপুরবাসীর কাছেই একটা আনন্দের ব্যাপার যে তারা আজ নিজেকে একটি বিভাগীয় শহরের বাসিন্দা হিসাবে পরিচয় দিতে পারছেন। এই গর্বটা আমারও, সে আমি যেখানেই থাকিনা কেন। আমার মনে আছে খুব ছোটবেলায় যখন প্রথমবারের মতো সোডিয়ামের আলো পেলাম আমার রংপুরে তখন রাতের বেলা নিজের জামার রং বদলে যাওয়া দেখে কি এক রোমাঞ্চকর অনুভুতির জন্ম হতো নিজের মধ্যে! লালকুঠি মোড় থেকে ফুটপাত ধরে হেঁটে হেঁটে জিলা স্কুলে যেতাম। ফুটপাতগুলো অবশ্য মাঝেমাঝেই কিছুটা উচু থাকতো, হাঁটার সময় দুষ্টমি করে ধাক্কা দিয়ে অনেকে অনেককে ফেলে দিতাম! এভাবে আনন্দ করতে করতে হেঁটে হেঁটে স্কুলে যেতাম, স্কুল থেকে ফিরতাম। ছোটবেলার এই ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র আনন্দগুলো আজ আমাদের পথ চলার সঙ্গী। আমার জন্মস্থান বিভাগ হয়েছে এই আনন্দ নিয়ে দেশে ফিরে রংপুর যাওয়ার পর যে জিনিসটা আমাকে সবচেয়ে অবাক করেছিল সেটা হলো আমাদের যানজট আর ফুটপাত দখলদারিত্ব। আর সেই সঙ্গে অটোরিক্সা নামক একটা ভয়াবহ যান! সেই অটোরিক্সায় না চড়লে বুঝতে পারতাম না এটা কতোটা ভয়াবহ একটা যান হতে পারে! অনেকের মতো আমিও ভেবেছিলাম এই যানটা কিনে রাস্তায় নামাতে! এই যানটার তাৎপর্য্য বুঝতে পারলাম অটোরিক্সায় চড়ে নানাবাড়িতে যাওয়ার সময়। এ এক অদ্ভুত যান যার ব্রেক চাপার পরেও এটা ঠিকভাবে থামানো যায়না! অথচ সড়ক দুর্ঘটনার দিক দিয়ে আমরা পৃথিবীর অন্যান্য দেশগুলোর দিক দিয়ে অনেক বেশী এগিয়ে আছি।
সিটি বলতে আসলে কি বোঝায়? আর সিটি কর্পোরেশন যিনি চালাচ্ছেন তার দায়িত্বগুলো কি? সিটি মানে শুধু শহর নয়, বরং সিটি বলতে বোঝায় একটা বড় শহর। যেখানে নাগরিকরা সবধরণের নাগরিক সুযোগ-সুবিধা পাবেন। আর সিটি কর্পোরেশনের দায়িত্ব হলো সেই সুযোগ-সুবিধাগুলো নিশ্চিত করা। সিটি কর্পোরেশনের দায়িত্বে যিনি থাকেন তাকে আমরা মেয়র বলে ডাকি, যদিও কিছুদিন আগেও সেটা চেয়ারম্যান হিসাবেই বিবেচিত হতো। সিটি কর্পোরেশন মেয়র বা পৌরসভার চেয়ারম্যান হলেন তার এলাকার প্রধান। মেয়র বা চেয়ারম্যান যেটা বলেই আমরা ডাকিনা কেন তিনি হলেন তার এলাকায় নিয়েজিত একজন কর্মী যার দায়িত্ব হলো তার এলাকার মানুষের নাগরিক সুযোগ-সুবিধাগুলো নিশ্চিত করা। আমরা যেমন ভোট দিয়ে মেয়র বা পৌরসভা চেয়ারম্যানকে নির্বাচিত করি ঠিক সেভাবে ইউরোপের দেশগুলোতেও মেয়র নির্বাচন করা হয়। পড়াশুনার জন্য সুইডেনে অবস্থান করছি বলে আমি যেখানে থাকি সেই এলাকার মেয়র সম্পর্কে জানার সৌভাগ্য হয়েছে কিছুটা। এই এলাকার নাম লুন্ড্। ঠিক আমাদের মতো করেই এদের এখানে পৌরসভা মেয়রকে নির্বাচিত করা হয়। আমাদের দেশের মতো এখানকার মানুষও মেয়র নির্বাচনের ভোট দিয়ে থাকে। তবে ভোট দেবার ক্ষেত্রে একটাই অমিল আছে তা হলো এদের ইলেকট্রনিক ভোট দেবার একটা সুযোগ আছে সেটায় যে কেউ ঘরে বসেও ই-মেইলের মাধ্যমে ভোট দিতে পারবে যেটা আমাদের দেশে নেই। ১৮৬৩ সালে দক্ষিণ সুইডেনে লুন্ড্ পৌরসভাটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। বর্তমান জনসংখ্যা প্রায় ৮৫,০০০, যার মধ্যে প্রায় ৪৫,০০০ জনই লুন্ড্ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। বলা যায় বিশ্ববিদ্যালয়টিকে কেন্দ্র করেই এই শহরটি গড়ে উঠেছিল। ২০০৫ সালে সমগ্র সুইডেনের মধ্যে লুন্ড্ পৌরসভা অর্জন করে সবচেয়ে মানসম্মত পৌরসভার পুরস্কারটি। নির্বাচিত মেয়র পৌরসভার বাহিরেও কিছু বাড়তি নাগরিক সুযোগ-সুবিধা দেবার চেষ্টা করেছিলেন, শুধু এই পৌরসভা মেয়রই নন সুইডেনে নাকি কোন পৌরসভা সবচেয়ে ভাল কাজ করবে সেটার একটা প্রতিযোগিতা চলে সারাবছর। আর এই প্রতিযোগিতার কারনে সব মেয়রদের মধ্যে থাকে ভালটাকে আরও বেশি ভাল করার প্রাণবন্ত প্রচেষ্ঠা। চলতি বছরের জুনমাসে পৌরসভা থেকে স্কুলের বাচ্চাদের পুরস্কৃত করা হলো কমিউনিটি কাজের ভিত্তিতে। যারা বিগত বছরে স্বেচ্ছাসেবামুলক কাজে জড়িত ছিল তাদের সবাইকে গল্পের বই দিয়ে পুরস্কৃত করেছে পৌরসভাটি। যেসব বাচ্চারা পৌরসভা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে জনসচেতানমুলক কাজে অংশ নিয়ে পৌরসভাকে সহায়তা করেছিল তাদের অনুপ্রেরণা সৃষ্টির লক্ষেই এসব অনুষ্ঠানের আয়োজন করে পৌরসভাটি।
আমাদের রংপুর পৌরসভাটিও লুন্ড্ পৌরসভার সমসাময়িক। লুন্ড্ পৌরসভা প্রতিষ্ঠার মাত্র ছয় বছর পরে অর্থ্যাৎ ১৮৬৯ সালে রংপুর পৌরসভাটি প্রতিষ্ঠিত হয়, যার বর্তমান জনসংখ্যা প্রায় ৩,২০,০০০ (২০০১ সালের আদমশুমারী অনুযায়ী)। ১৮৬৯ সালে পৌরসভার দায়িত্ব নেয়া ই জে গ্লেজিয়ার থেকে আজকের ২০১১ সালের দায়িত্বপ্রাপ্ত মেয়র আবদুর রউফ মানিক চাচা সহ এ পর্যন্ত ৪৫ জন চেয়ারম্যান বা পৌরসভা প্রধান রংপুর পৌরসভার দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন। বয়সের দিক দিয়ে রংপুর পৌরসভাটি বাংলাদেশের সবচেয়ে প্রাচীন পৌরসভাগুলোর একটি। আজ ২০১১ সালে আমরা যেটাকে রংপুর সিটি কর্পোরেশন বলছি।
সুইডেন বা বিলেতে নির্বাচিত পৌর মেয়র যারা তারা তাদের এলাকার নাগরিকদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ রাখার বন্দোবস্ত করে রেখেছেন। যে কোন পৌর নাগরিক তাদের সমস্যার কথা জানিয়ে মেয়রের কাছে চিঠি বা ই-মেইল পাঠাতে পারেন। আর মেয়ররাও সেগুলোর উত্তর জানিয়ে দেন। এলাকা পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য তারা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলোর সাহায্য নিয়ে থাকেন। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলোতে কাজ করে মুলত এলাকার বিভিন্ন স্কুল-কলেজের ছেলে-মেয়েরা। এরা সবাই বিনাপারিশ্রমিকে কমিউনিটি ওয়ার্কের কাজে নিজেদের স্বেচ্ছায় নিয়োজিত করে। পৌর এলাকার স্কুল-কলেজগুলোও যৌথভাবে কাজ করে পৌরসভাকে সাহায্য করে। বাধ্যতামুলক কিছু কোর্স এর আওতায় হাইস্কুল গ্রেডের ছেলে-মেয়েদেরকে কমিউনিটি ওয়ার্ক করতে হয়, না হলে তারা পরের ক্লাশে ওঠার যোগ্যতা অর্জন করেনা। একদিকে নাগরিক সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করার জন্য বড় অংকের বাজেট আর অন্যদিকে এলাকার স্বেচ্ছাসেবকদের সহায়তার মাধ্যমে পৌর মেয়র তার এলাকার নাগরিক সুবিধার বিষয়টি নিশ্চিত করার সর্বোচ্চ চেষ্টা করেন।
আজকের বিলেতই একসময় আমাদেরকে প্রায় ২০০ বছর শাসন করেছিল এবং তাদের শাসনকালীন সময়েই আমাদের রংপুর পৌরসভাটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। সেই সময় থেকে আজ ২০১১ পর্যন্ত এখনও আমাদের পৌর নাগরিকরা সবাই তাদের নাগরিক অধিকারটুকু কি পেয়েছে? আমি দেশে গিয়ে ফুটপাত ধরে বাজার ঘুরতে আসার চেষ্ঠা করেছিলাম কয়েকবার, কিন্তু বাজারের সব ফুটপাত এখন হকারের দখলে। ঠিকভাবে হাঁটার কোন উপায় নাই। এরমধ্যে ময়লা-আবর্জনাতো আছেই। বিলেতের সঙ্গে পার্থক্য করার মতো অর্থনৈতিক অবস্থা হয়তো আমাদের নেই, কিন্তু বিলেত বা সুইডেন বা ইউরোপের উন্নত দেশগুলোর চেয়েও আমাদের জনসংখ্যা অনেক বেশি। আমরাতো এটাকে জনশক্তিকে পরিণত করতে পারতাম! আমাদের রংপুর শহরেই স্কুলের সংখ্যা অনেক। সেখানে যদি কমিনিউটি ওয়ার্ক নামক একটা কোর্স চালু করে আমাদের শিক্ষার্থীদেরকেই উন্নয়নের কাজে লাগাতে পারতাম তাহলেওতো শহরটাকে আরও সুন্দর রাখতে পারতাম! প্রতিটি স্কুলের অষ্টম থেকে দশম শ্রেনী পর্যন্ত শিক্ষার্থীদেরকে যদি বাধ্যতামুলক কোর্সের আওতায় এনে ৫০ মার্কস এর একটা কোর্স বিদ্যালয়গুলোতে রাখা যায় তাহলে কি ভাবতে পারেন এই শহরের প্রতিদিন কতগুলো বাচ্চা সেবামুলক কাজে নিজেকে অন্তর্ভুক্ত করতে পারবে! সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধির ব্যাপারেও আমাদের বাচ্চাগুলো কাজ করতে পারে। আর এসব নৈতিক গুনাবলী নিয়ে যে বাচ্চাটি বড় হবে সে তার পরবর্তী প্রজন্মকে নিজের এলাকা সম্পর্কে সচেতনতার ব্যাপারে উদ্বুগ্ধ করবে। তাত্ত্বিক পড়াশুনার পাশাপাশি হাতে-কলমে শিক্ষাটাও কিন্তু তারা এভাবে লাভ করতে পারবে। এভাবে শিক্ষার্থীদেরকে স্বেচ্ছামুলক কাজে নিয়োজিত করালে সিটি কর্পোরেশনের কিন্তু অর্থ ব্যায় হচ্ছেনা। আমরা বাচ্চাদের বইয়ের মধ্যে লিখে রেখেছি রাস্তায় চলাচলের নিয়মাবলী। বাচ্চারাও সেগুলো পড়ে জানতে পারে কিভাবে রাস্তাপাড় হতে হয়। জেব্রা ক্রসিং, লাল-হলুদ-সবুজ বাতি এগুলো সবই বইয়ের মধ্যে আছে। কিন্তু বাস্তবে কোন জেব্রা ক্রসিংও নেই, নেই কোন লাল-হলুদ-সবুজ বাতি। আমরা বইয়ের মধ্যে লিখে রেখেছি বৃদ্ধদের রাস্তা পারাপারে সাহায্য করার কথা, এটাকে নৈতিক কাজ হিসাবে দেখানো হচ্ছে, বাধ্য করানো হচ্ছেনা। অথচ পড়ানোর পাশাপাশি বাচ্চাদেরকে যদি শহরের রাস্তায় এনে সেটা হাতে-কলমে শিখানো যেত তাহলে কি সেটার তাৎপর্য্যটা অনেক বেশি হতোনা? কমিউনিটি কাজের ধারণাটি আমাদের সমাজে আছে। কিন্তু সেটার বাস্তবিক প্রয়োগ কখনোই চোখে পড়েনা।
বৈশ্বিক তথ্য প্রযুক্তির কল্যাণে রংপুরের সংবাদগুলো আমরা বিদেশে থাকা মানুষগুলো খুব দ্রুত পেয়ে যাই। যারা আমাদেরকে এসব সংবাদ প্রদান করছে তারা কিন্তু সবাই একধরণের স্বেচ্ছাসেবক। এইতো কিছুদিন আগে 'রংপুর ওয়েব' নামক একটা অনলাইনভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম প্রতিষ্ঠা করলো রংপুরের কিছু তরুণ। এই কাজের জন্য তারা কোন পারিশ্রমিক পায়না। অথচ মনের আনন্দে স্বতস্ফূর্ততার সঙ্গে তারা প্রতিদিন রংপুরের সংবাদগুলো ইন্টারনেটে জানিয়ে দিচ্ছে। এত বড় মানষিকতার তরুণ সমাজ আমরা কোথায় পাব বলুন? কিছু তরুণ সামাজিকসমস্যার কারনে মাদকাসক্ত হয়ে পড়ছে। তারা কেন মাদকাসক্ত হচ্ছে এর কারন আমরা খোঁজার চেষ্টা করিনা অথবা তাদেরকে ভালকাজে অন্তর্ভুক্ত করার ভাবনাটিকেও মাথার মধ্যে আনিনা কখনো, অথচ পাড়ার কেউ বিপদে পড়লে দেখা যায় এসব তরুনরাই সবার আগে ছুটে আসে। আমাদের শহরে কোথায় মাদকদ্রব্য কেনাবেচা হয় সেটা আজ একটা ছোট বাচ্চাও বলে দিতে পারে। আমাদের চোখের সামনে মাদকদ্রব্য কেনাবেচা চলে, আমাদের চোখের সামনে তরুণ সমাজ মাদকাসক্ত হয়ে পড়ে অথচ এলাকার পৌরসভাটি তা নির্মুল করার কোন উদ্যোগ কখনোই গ্রহণ করেনি। এক্ষেত্র পৌরসভা এটাকে পুলিশ প্রশাসনের দায়িত্ব বলে গা এড়াতে পারে। সেই তরুণসমাজতো পৌরসভার বাহিরের মানুষ না। পৌরনাগরিককে বিপথগামীতার হাত থেকে রক্ষা করার দায়িত্ব অবশ্যই পৌর মেয়রকে নিতে হবে।
বর্তমান পৌরমেয়র মানিক চাচা নিঃসন্দেহে একজন আধুনিক মনের মানুষ। তিনি ইউরোপের বিভিন্ন দেশ সহ অষ্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ডে ঘুরে বেরিয়েছেন। উন্নতদেশগুলোর পৌর নাগরিকদের সুযোগ-সুবিধাগুলো তিনি নিজের চোখেই দেখেছেন। বিদেশে রংপুরের প্রবাসীদের সঙ্গেও অন্য চেয়ারম্যানদের চেয়ে মানিক চাচার যোগাযোগটাও বেশ ভাল। আমরা তার কাছে ইউরোপের মতো সিটি কর্পোরেশন আশা করিনা। আমরা আশাকরি তিনি তার এই আধুনিক মানষিকতা নিয়ে রংপুর সিটি কর্পোরেশনকে একটা আধুনিক পরিচ্ছন্ন সিটি কর্পোরেশন হিসাবে গড়ে তোলার চেষ্ঠা করবেন। আমাদের তরুণ সমাজকে সামাজিক উন্নয়নের কাজে অন্তর্ভুক্ত করার চেষ্ঠা করবেন। যারা মাদকাসক্ত হয়ে পড়ছে তাদেরকে কিভাবে স্বেচ্ছাসেবামুলক কাজে নিয়োজিত করা যায় সেটা ভেবে দেখার চেষ্টা করুন এবং একইসঙ্গে মাদককে নির্মুল করার চেষ্টা করুন। আমাদের শহর উন্নয়নের জন্য স্বেচ্ছাসেবামুলক কাজে অংশ নেবার জন্য সব স্কুল-কলেজের প্রধানদের নিয়ে একত্রে বসে সিলেবাসে কমিউনিটি কাজের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করান যার মাধ্যমে স্কুল-কলেজের ছেলে-মেয়েগুলো একটা নিরাপদ, সুন্দর শহর গড়ে তোলার জন্য পৌর কর্তৃপক্ষকে সাহায্য করতে পারে। মানুষকে হাঁটার সুযোগ করে দেবার জন্য ফুটপাতগুলো থেকে অবৈধ দখলদাখিত্ব উচ্ছেদ করুন। রংপুর সিটি কর্পোরেশন হয়ে উঠুক বাংলাদেশের মধ্যে সবচয়ে সুন্দর আর নিরাপদ সিটি কর্পোরেশন। বাংলাদেশের অন্যান্য সিটি কর্পোরেশনগুলো যেন আপনার কাজকে আদর্শ মনে করে আপনাকে অনুসরণ করতে পারে সেই চেষ্ঠাটি করার সুযোগ রয়েছে আপনার হাতে। আমাদের তরুণসমাজ ভাল কাজ করার জন্য উদগ্রীব হয়ে আছে। তাদেরকে নিয়ে, এলাকার মানুষকে নিয়ে, এলাকার প্রশাসনকে নিয়ে আপনার নিজের জন্মশহরটিকে সুন্দর করে সাঁজিয়ে তুলুন। শুভকামনা রইল রংপুর সিটি কর্পোরেশনের জন্য।
ই-মেইল: rifat218@gmail.com
No comments:
Post a Comment